নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার একটি রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা ওই নারীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা (২৭)। আট ভাই-বোনের মধ্যে জান্নাত দ্বিতীয়। জান্নাত আরা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের পাশের কুলধর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. অলিয়ার রহমান ওরফে পাগলা অলি মিয়ার মেয়ে। মামুনুল হক ওই সময় নারীর নাম আমেনা তৈয়াবা বললেও তার নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। তবে জান্নাত আরা ঝর্ণার আগে বিয়ে হয়েছে, সেই ঘরে আব্দুর রহমান ও তামীম নামে দুজন পুত্র সন্তান আছে। সন্তান দুটি তার বাবার বাড়ি খুলনায় থাকেন। এবার ঝর্ণার প্রথম পূত্র আব্দুর রহমান মাওলানা মামুনুল হকের সাথে তার মা ঝর্ণার সম্পর্ক এবং তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হতে শুরু করে তাদের জীবনে মামুনুলের প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন।
এক ফেসবুক লাইভে ঝর্ণা পুত্র আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার বাবা শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহ মাওলানা মামুনুল হককে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতেন। আর সেই সুযোগ নিয়েই তিনি আমার মায়ের সংসার ভাঙ্গেন। প্রত্যেক সংসারে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ হয় জানিয়ে ঝর্ণার বড় ছেলে আরও বলেন, আমার মাকে সে ঘরে একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দিতো। স্বামী স্ত্রীর কলহের সুযোগ নিতো সে।
পাঠকের জন্য ঝর্ণা পুত্র আব্দুর রহমানের বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো…
আমি বড় হয়েছি। এখন সব বুঝি।কিন্তু আমার একটি ছোট ভাই আছে। আমি যা সহ্য করে নিতে পারবো আমার ছোট ভাই সেটা পারবে না। সবার কাছে এখন আমাদের কথা শোনা লাগছে। সমাজের সামনে আমরা মুখ দেখাতে পারছি না। রাতে এই ঘটনা ঘটার পর থেকে আমার ছোট ভাইকে দেখলাম সে রাত তিনটা- চারটা পর্যন্ত ঘুমাই নাই। সে এখন ছোট। সে মানসিকভাবে আহত হয়েছে। সে বাসা থেকে বেরে হয়ে গেছে।
আমি বলবো এখন যা হয়েছে সেটা পুরোটাই আমার বাবার কর্মের ফল। আমার বাবা সেই মানুষটাকে(মাওলানা মামুনুল হক) অন্ধের মত বিশ্বাস করে। ঐ লোকটার(মাওলানা মামুনুল হক) কিছুদিন আগে একটা মাহফিল ছিলো। কিন্তু পুলিশ তাকে সেটা করতে দিবে না। পরে সে একটা জায়গায় লুকিয়ে ছিলো। এটা দেখে আমার বাবার সেকি কান্না!
আমার বাবা সেই লোকটার জন্য কান্না করতে দেখে আমি হাসতেছিলাম। কারণ এই ঘটনার আগেই আমি তার আর আমার মায়ের সম্পর্কের কথা জানতাম।
যে লোকের জন্য আমার বাবা কান্না করলো সেই লোকটাই আমার বাবার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করলো!
তারপরে যখন মামনুল হককে পুলিশ জেলে নিলো। তখন আমার বাবা থানার ওসিকে বললো আপনি আমাকে জেলে রেখে মাওলানা মামুনুল সাহেবকে ছেড়ে দিন। কতটা ভালোবাসতো আমার বাবা ঐ লোকটাকে। কতটা ভালোবাসলে মানুষ এই রখম কথা বলতে পারে।
ঝর্ণার পুত্র ডিভোর্সের আগের কিছু স্মৃতি নিয়ে বলেন, আরও আগের ঘটনা যখন ডিভোর্স হয়নি। আমার বয়স তখন আরও কম। আমার ছোট ভাই তখন মায়ের দুগ্ধ্ব পানের বয়স। আমার বাবা যখন বাসায় ছিলো না তখন এই মামুনুল হক আমার বাসায় আমার মায়ের রুমে প্রবেশ করে আমার মাকে কুপ্রস্তাব দেন। যে সময়ে আমার ছোট ভাই মায়ের দুগ্ধ্ব পান করছিলো।
কিন্তু আমার মা সেই প্রস্তাব প্রত্যখান করে বলে না এ সম্ভব না। আপনি তো আপনার কাছের বন্ধুকে টকাচ্ছেন।
সে এরপর ফেরত গেল কিন্তু সেই থেকে তার মনে একটা কামভাব ঢুকে গেছিলো। একটা লোভ তার মধ্যে কাজ করছিলো। সে একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু সেই সুযোগ যে এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে তা সেই বুঝতে পারি নাই।
আপনারা কারও অন্ধ ভক্ত হয়েন না জানিয়ে দেশবাসির কাছে ঝর্ণা পুত্র এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন। সবারই মুখোশের আড়ালে একটা চেহারা আছে বলেও জানায় ঝর্ণার বড় ছেলে ।
উল্লেখ্য, শনিবার (৩ এপ্রিল) হেফাজতের নেতা মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে যান। এর পরে সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।